আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। গেল ২ মাসে মূলধনী যন্ত্র আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা কমেছে ৪৪ শতাংশ। মধ্যবর্তী পণ্যের আমদানিও কমেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগ বাড়াতে ভাবমূর্তি ফেরানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে সংস্কার কমিটি গঠনের তাগিদ তাদের। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, বন্যা ও তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতায় টালমাটাল দেশের ব্যাবসায়িক পরিবেশ। ফলে নতুন করে বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না শিল্প উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল ২ মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতি কিংবা উৎপাদনের জন্য মধ্যবর্তী পণ্যের আমদানি কমেছে।
জুলাই-আগস্টে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে ২৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে। যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৪ শতাংশ কম। শিল্পের কাঁচামালের এলসি বাড়লেও, উৎপাদনের জন্য মধ্যবর্তী পণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ১০ শতাংশের মতো।
অর্থনীতিবিদ মাশরুর রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন,‘আগামী দিনে বিনিয়োগ বাড়া বা কমার যে একটা প্রধান নির্দশক হলো মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি, সেই জায়গাটাই যদি আমরা দেখি তাহলে দেখি সেটা কিন্তু ক্রমাগত কমছে।
’
রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন কারণে অর্থবছরের দুই মাসে সব মিলিয়ে আমদানির ঋনপত্র খোলা ও নিষ্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, শিল্প এলাকায় সহিংসতা চলতে থাকলে, পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি এবং ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার দাবি তাদের।
ডিসিসিআই সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘বিনিয়োগ যখন করতে যায় একটি দেশে তখন সে প্রথমেই নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে। যখন কেউ নিরাপদ মনে করবে না তখন কেন সে অর্থ বিনিয়োগ করবে।
অতি দ্রুত আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চা ক্ষমতা দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত।’ বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ছে। অনেক দিন ধরে ডলারের দরও স্থিতিশীল। আমদানিতে যে কড়াকড়ি ছিল, তা শিথিল করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এলসি মার্জিন নির্ধারণ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আমদানি আগামীতে বাড়বে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা।