শুক্রবার, অক্টোবর ৪, ২০২৪
শিরোনামঃ
||আধিপত্য বিস্তারে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, দেশী অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক-৪||বড়াইগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে হাট-বাজার কমিটির মত বিনিময় সভা||শৈলকুপায় বিকাশের এজেন্টকে কুপিয়ে আহত, ২ লক্ষ টাকা ছিনতাই||নাইজেরিয়ায় যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে নিখোঁজ অন্তত ১০০||ফেসিয়াল নার্ভ ডিসঅর্ডারে ভুগছেন সালমান||বেতন কমছে সাকিব আল হাসানের||সাবেক এমপি দবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার||বেনাপোল দিয়ে ২৭৬ টন ইলিশ গেল ভারতে||বৈরী আবহাওয়া : ৬ রুটে নৌ-চলাচল বন্ধ ঘোষণা||রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি হাসনাত আবদুল্লাহর||নড়াইলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ৩ ব্যবসায়ীকে ৭ হাজার ৭শত টাকা জরিমানা||বিপিএলে শাকিব খানের দল ‘ঢাকা ক্যাপিটালস’||ম্যারাডোনার দেহাবশেষ স্থানান্তরে আর বাধা রইল না||লেবাননের বাংলাদেশিদের জরুরি বার্তা দূতাবাসের||মাহমুদুর রহমান কেন কারাগারে, জানালেন আসিফ নজরুল
Homeআর্ন্তজাতিকইসরাইলকে অঙ্গীকারে বাধ্য করার সময় এসেছে : গুতেরেস

ইসরাইলকে অঙ্গীকারে বাধ্য করার সময় এসেছে : গুতেরেস

ডেস্ক রিপোর্ট

অবরুদ্ধ গাজার সাথে মিসরের সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। যুদ্ধবিরতির নতুন আহ্বান নিয়ে গতকাল শনিবার গাজা সীমান্ত পরিদর্শনের জন্য মিসরে পৌঁছেন তিনি। পরে গাজার রাফা বর্ডার ক্রসিংয়ে গুতেরেস বলেন, ত্রাণে বাধা দেয়া ইসরাইলের একটি ‘নৈতিক আক্রোশ’।

গাজাজুড়ে মানবিক পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকারের জন্য এখন দেশটিকে একটি কঠিন অঙ্গীকারে বাধ্য করার সময় এসেছে। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ইসরাইল বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি দেয়ার পর এ সফর করছেন গুতেরেস। মিসরের সীমান্তবর্তী শহরটিতে হামলা না চালানোর আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেই এই হুমকি দেয় ইসরাইল। খবর আলজাজিরা, রয়টার্স, আনাদোলু ও বিবিসির।

এ দিকে সফরের শুরুতে মিসরের উত্তরাঞ্চলীয় সিনাই উপত্যকার আল আরিশের একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন গুতেরেস। সেই সাথে রাফায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সীমান্তেই গাজাবাসীর জন্য বিপুল পরিমাণ আন্তর্জাতিক ত্রাণসামগ্রী মজুদ করা হয়েছে। এ ছাড়া এখান দিয়েই রাফাহ শহরে ত্রাণ পৌঁছানোর অন্যতম প্রবেশপথ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অঞ্চলে আরো বেশি পরিমাণে ত্রাণসহায়তা আসার পথ সুগম করতেই গুতেরেসের এই সফর।

গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পরপরই গাজার সাথে মিসরের এই সীমান্ত সফর করেছিলেন গুতেরেস। আর এই রমজানে মুসলিম দেশগুলোতে বার্ষিক সংহতি ভ্রমণের অংশ হিসেবে মিসর ও জর্দান সফর করছেন তিনি। যুদ্ধ শুরুর পর এ পর্যন্ত রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছে গাজার অন্তত ২০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। যদিও গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ। তবে পুরো উপত্যকাজুড়েই বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশা বাড়ছে।

এর আগে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করেছিল জাতিসঙ্ঘ। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে পুরো অঞ্চলেই দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিকে গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় হামলায় ৭২ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন। অন্য দিকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি নতুন প্রস্তাবে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোট সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

গাজায় নিহত বেড়ে ৩২,০৭০ : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বর্বর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩২ হাজার ৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজার ২৯৮ জন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসশাসিত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরাইলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত বিমান হামলা, কঠোর অবরোধ ও স্থল অভিযানের মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।

এ দিকে রাফাহ শহরের পূর্বাঞ্চলে শুক্রবার রাতভর ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে। সেখানে একটি আবাসিক বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। হামলায় ভবনে অবস্থানরত একটি বাস্তুচ্যুত পরিবারের পাঁচ শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরো সাতজন আহত হয়েছে। তাদের সবাইকে রাফাহর আল-নাজ্জার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শহরের পশ্চিম অংশেও অবিরাম হামলা হয়েছে। এতে এলাকার ভবনগুলোর ক্ষতি হয়েছে।

অন্য দিকে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের চার পাশে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে বলে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সেনাবাহিনী হাসপাতালের ভেতরে আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

চিকিৎসা সরঞ্জামেরও ক্ষতি করছে। গোটা এলাকা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে চালানো অভিযানে ১৭০ জনেরও বেশি সশস্ত্র যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং ৮০০ সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।

এক্সে (সাবেক টুইটার) এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার শুরু হওয়া এই অভিযানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা এবং অস্ত্রের মজুদ খুঁজে পেয়েছে। শুক্রবার ইসরাইলি বিমানবাহিনী গাজাজুড়ে অপারেশনাল হেডকোয়ার্টার, সামরিক অবস্থান এবং অবকাঠামোসহ ৩৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করেছে।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন ৮২ জন এবং আহত হয়েছেন ১১০ জন ফিলিস্তিনি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে মোট নিহতের সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো চাপা পড়ে আছে অনেক লাশ। এসব এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী সোমবার থেকে আল-শিফা হাসপাতালের আশপাশে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার রোগী এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

ভেটোর প্রশংসা হামাসের : ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। প্রস্তাবে সব বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে গাজায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ও আগ্রাসি শক্তির পক্ষে পক্ষপাতিত্বপূর্ণ মার্কিন খসড়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আমরা দেশ তিনটির প্রশংসা করছি। প্রস্তাবটিতে আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইল যে গণহত্যার যুদ্ধ চালাচ্ছে তাকে ঢাকা দিতে ও বৈধতা দিতে ওয়াশিংটন এ প্রস্তাব এনেছিল।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি : ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে স্পেন, আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্লোভেনিয়া। গত শুক্রবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের পর এ কথা বলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। সাংবাদিকদের সানচেজ বলেন, কাউন্সিলের সমাবেশের ফাঁকে আইরিশ, মাল্টিজ ও স্লোভেনিয়ান নেতাদের সাথে বৈঠকের পর এই চুক্তি হয়েছে। তিন দেশের সাথে মিলে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে স্পেন।

বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে আয়ারল্যান্ড বলেছে, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের একমাত্র উপায় হল একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা। তবেই শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারবে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিরা। নভেম্বরে স্পেনে এক বৈঠকে একমত হয়ে আরব রাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছিল, ফিলিস্তিন-ইসরাইল সঙ্ঘাত বন্ধ করার উপায় হলো একটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধান। ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসঙ্ঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৩৯টি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

Stay Connected
16,985FansLike
2,458FollowersFollow
61,453SubscribersSubscribe
সর্বশেষ খবর
আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here