ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রবেশ পথ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও জুয়া। মাদকের ছোবলে পড়ে অনেক পরিবার হচ্ছে সর্বস্বান্ত। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলকায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যা”েছ ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজা ও চোলাই মদ।উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের রামপুর,জাথালিয়া (বড়চালা ও কুকিলাচালা), চাপাইর ইউনিয়নের ধুলিগড়া ও ভাল্লুকবেড় ,বোয়ালী ইউনিয়নের শিমুলচালা ,মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া, নাগচালা,বরাব ও মৌচাক ইউনিয়ানের কলাবাধা এলাকায় চোলাইমদের কারখানা রয়েছে।
এসব কারখানায় প্রকাশ্যেই তৈরি হ”েছ চোলাইমদ। এসব চোলাইমদ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে নির্বিঘ্নে বিভিন্ন এলাকায় পাচার হ”েছ বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে,উত্তরবঙ্গ থেকে মালবাহী ট্রাক,যাত্রীবাহীবাস ও ট্রেনযোগে মাদকের চালান আসছে রাজধানীর প্রবেশ মুখ কালিয়াকৈরে। মাদক ব্যবসায়ীরা সেই মাদক উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার পাড়ামহল্লায় অবাদে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
একরকম বাধাহীন ভাবেই কালিয়াকৈরে মাদক ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি মাদক বিক্রি হচ্ছে কালিয়াকৈর পৌরসভার শিল্পাঞ্চল মৌচাক , সফিপুর, চন্দ্রা, সুত্রাপুর ও কালিয়াকৈর বাজার এলাকায়। এসব এলাকায় মাদককারবারীদের শক্তিশালি সিন্ডিকেট রয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে কেউ মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
আলাপকালে কয়েকজন কারাখানা শ্রমিক জানান, রাতের বেলা কারখানা ছুটি শেষে বাসায় ফেরার পথে মাদকসেবীরা তাদের নানা ভাবে হয়রানি করে। মোবাইলসহ টাকা পয়সা কেড়ে নেয়। চিতকার-চেচামেচি করলে অস্ত্রের ভয় দেখায়।
উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: লোকামান হোসেন বলেন,বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ীদের কারণে আমরা উদ্বিগ্ন। মাদক ও জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতেই এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সৃষ্টি হ”েছ ।তারা চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ।
উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সিরাজুল ইসলাম,সুত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: সোলাইমান মিন্টু ,শ্রীফলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আজিবুর রহমান , আটাবহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাকিল মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে পাল্লা দিয়ে চলছে মাদক ও জুয়ার আসর। মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়িদের কারণে নির্ভিগ্নে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। মাদকসেবীরা মাদক সেবন করে রাস্তাঘাটে মাতলামি ও পথচারীদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালা করে।
সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু ছিতাইয়ের ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা ভোর রাতে মাছের আরতে যাওয়ার পথে উপজেলার দীঘিবাড়ি ব্রীজের নিকট তিনজন মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনটি মোবাইলসহ নগদ ৬০হাজার টাকা, রাতের বেলা কালামপুর এলাকা থেকে বাবু মিয়া ও নাইমসহ তিন যুবকের কাছ থেকে নগদ ৩০হাজার টাকা ,তিনটি মোবাইল ও একটি মটর সাইকেল ছিনিয়ে নেয়।
উপজেলার সাহেবাবাদ গ্রামের মৃত রহিম মোল্লার ছেলে করিম মোল্লার বাড়ি থেকে ৩লাখ টাকা মূল্যের ২টি গাভী চুরি হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার সফিপুর বাজারের র্স্ণ ব্যবসায়ী মানিক ও তার পুত্র সৌরভ ছিনতাইকারীদের রাম দায়ের কুপে মারাত্নক আহত হয়।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম নাসিম জানান,গত তিন মাসে কালিয়াকৈর থানায় ১৬টি মাদকের মামলায় ১৬জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৬টি মামলাই নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আমরা মাদক ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।