রাজধানীর আশুলিয়া থানার অপরাধজনক ষড়যন্ত্র ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে আশুলিশা থানা পুলিশ।
আজ শনিবার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক আবু তাহের মিয়া এ আবেদন করেছেন।
এদিন বিকালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি হবে বলে জানা গেছে। এর আগে গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই মামলায় শুক্রবার ঢাকা জেলার উত্তর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী মো. রবিউল সানি বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার ৪ নং এজাহারনামীয় আসামি হলেন সাফি।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসির সাবেক সচিব ড. ফেরদৌস জামান, সাবেক সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।
মামলায় বলা হয়, বাদী সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন। গত ১৬ জুলাই থেকে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অন্যান্য সহপাঠিদের সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বৈষম্য মূলক নীতি ও ছাত্র নিপীড়নের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন। তৎকালীন সরকার ও বিশ্ববিদ্যায়ল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর অপতৎপরতা ও চাপে তিনি বিশ্ববিদ্যায়ল ছেড়ে তার নিজ এলাকা আশুলিয়ায় চলে যান এবং সেখানে আন্দোলন চলমান রাখেন।
গত ৪ আগস্ট আনুমানিক সকাল ১০ টায় ডেইরিগেট এর সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শান্তিপূর্ণভাবে যোগদান করেন। বেলা তিনটায় আন্দোলন ডেইরি গেট হতে বাইপাইলের দিকে সন্ত্রাসী বাহিনী বাইপাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিতেভাবে গুলি ছোড়ে। আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে অবস্থান করার কারণে বাইপাইল জামে মসজিদের ছাদের উপর থেকে বাদীর পেটে স্নাইপার দিয়ে পুলিশ ও এর সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি করে। বাদী সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাহার পায়ে গুলি করলে তখন বাদী সাথে সাথে মাটিতে পড়ে যান। তখন বাদীর সাথে থাকা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাদীকে ক্লিনিক নিয়ে যাওয়া হলে তারা বাদীকে গুলিবৃদ্ধ অবস্থায় দেখে ক্লিনিক ও গেইট লাগিয়ে দেয়। এরপর সেখান থেকে রিক্সা করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে হাসপাতালে ডাক্তার নেই বলে তাড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সিহাব একটি বাসে করে রেসাডারল্যাবজোন হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন সেখানেও বাদীকে না রেখে তাড়িয়ে দেয়। তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সিহাব বাদীর মা কে ফোন মারফত জানান তিনি গুলিবৃদ্ধ। তখন তাহার মা ৯৯৯ কল দিয়ে এ্যাম্বলেন্স দিয়ে বাদীকে ঢাকার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারা বাদীকে ৩০ মিনিট ওটিতে রেখে বলে বাদীকে বাচবোনা। এরপর কেয়ার হাসপাতাল থেকে এ্যম্বুলেন্স করে মিরপুরে বাদীর মা অন্য একটি এ্যম্বুলেন্স করে মিরপুর আসেন।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বাদীকে এক্স-রে একটি প্রেসক্রিপশন হাতে দিয়ে তাকে চিকিৎসা না করে বাসায় চলে যেতে বলে এবং ডাক্তার বলেন এখানে নিরাপত্তা না। এখানে থাকলে পুলিশ নিয়ে মেরে ফেলবে। তখন বাদীর মা ডাক্তারদের সাথে তর্ক করে হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর তাকে অবজারভেশন রুমে নেওয়া হয়৷ বাদীর পেটে স্নাইপারের একটি গুলি ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বাদীর শরীরে পেটে ১টি ও উরুতে ২টি সহ মোট ৩টি গুলি লাগে। গত ৫ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসা নেন। গত ১৩ তারিখে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল থেকে রিলিজ করা হলিদের একের পর এক দুর্নীতি সামনে আসছে। সেই সঙ্গে চলছে মামলা ও গ্রেপ্তার।