নড়াইল প্রতিনিধি :
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সস্পাদক এবং মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার মোস্তফা কামাল (৪৮) কে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে।
গতকাল শনিবার (১১মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নড়াইল সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে নিহত চেয়ারম্যান শিকদার মোস্তফা কামালের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার লাশ নিয়ে লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউপির উত্তর মঙ্গলহাটা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসলে এালকার শতশত মানুষ তাকে এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে। এসময় স্বজনসহ এলাকার শতশত লোকজন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বিকাল সাড়ে ৫ টায় নিহত চেয়ারম্যানের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তিনি স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল শুক্রবার (১০ মে)রাত সাড়ে ৮টার দিকে লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দসী এলাকার একটি শালিসী বৈঠকে মোটর সাইকেলযোগে যাওয়ার পথে কুন্দসী এলাকার ছমির শিকদারের বাড়ির সামনে পৌছাঁলে পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া সশস্ত্র দুবৃত্তরা মোস্তফা কামাল কে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। দুবৃত্তদের ছোড়া গুলি মোস্তফা কামালের বুক ও পিঠ সহ শরীরে বিদ্ধ হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ মোস্তফা কামালকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত ১১টা সময় তার মৃত্যু হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আকবর হোসেন লিপনের হাত কেটে দেয়াও হয়। ওই ঘটনায় মোস্তফা কামাল কে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করে। অনেকেই মনে করছে ওই ঘটনার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে মোস্তফা কামালের মৃত্যু ঘটনা শুনে তার পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষ মল্লিকপুর আকবর হোসেন লিপনের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়। এসময় প্রতিপক্ষের দুজনকে শটগান দিয়ে গুলি করে আহত করে। আহতরা হলো মঙ্গলহাটা উত্তরপাড়ার লিটন শেখের ছেলে ফয়সাল শেখ (২৫) ও পান্নু মোল্যার ছেলে পলাশ মোল্যা (৪০)। তাদেরকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ওই এলাকায় পুলিশের একাধিক টিম আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। অভিযুক্তদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।