নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) ২০২৩ সালে চাঁদে একটি নতুন মিশন প্রেরণ করেছে, যার নাম “চন্দ্রযান-৩”। এটি চন্দ্রযান সিরিজের তৃতীয় মিশন, এবং এর প্রধান উদ্দেশ্য চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করা এবং সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করা।
চন্দ্রযান-৩ এর মিশন ও পরিকল্পনা
চন্দ্রযান-৩ মিশনের প্রধান উপাদান হলো একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভার। এই মিশনে কোনো অরবিটার অন্তর্ভুক্ত ছিল না, কারণ চন্দ্রযান-২ মিশনের অরবিটার এখনও কার্যকর অবস্থায় চাঁদের কক্ষপথে কাজ করছে। চন্দ্রযান-৩ মিশনের প্রধান লক্ষ্য ছিল চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারকে সহযোগিতা করা এবং চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করা।
প্রযুক্তিগত দিক
চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডারটির নাম “বিক্রম” এবং রোভারটির নাম “প্রজ্ঞান”। বিক্রম ল্যান্ডারটি চাঁদের পৃষ্ঠে নরম অবতরণ করতে সক্ষম, এবং এটি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম বহন করে যা চাঁদের মাটি এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। প্রজ্ঞান রোভারটি চাঁদের পৃষ্ঠে চলাচল করতে পারে এবং এটি চাঁদের মাটি এবং শিলার রাসায়নিক সংমিশ্রণ পরীক্ষা করতে সক্ষম।
বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য
চন্দ্রযান-৩ মিশনের বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের খনিজ সংস্থান ও রাসায়নিক সংমিশ্রণ পরীক্ষা, চাঁদের মাটির তাপীয় বৈশিষ্ট্য নির্ণয়, এবং চাঁদের ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহ। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জল বরফের সম্ভাব্য উপস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা মিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
সাফল্য ও প্রভাব
চন্দ্রযান-৩ মিশনটি চাঁদের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করে, যা ভারতের মহাকাশ গবেষণায় একটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সফল অবতরণ ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার প্রমাণ বহন করে। চাঁদে সফল অবতরণের মাধ্যমে ভারত চতুর্থ দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, এবং চীনের সাথে সামিল হলো, যারা পূর্বে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করেছে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
চন্দ্রযান-৩ মিশনের সফলতা ইসরোকে আরও বৃহত্তর ও জটিল মহাকাশ মিশন পরিচালনা করার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে। ভবিষ্যতে ইসরো মঙ্গল এবং অন্যান্য গ্রহে মিশন প্রেরণ করার পরিকল্পনা করছে, যা মহাকাশ গবেষণায় ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।
পরিশেষে
চন্দ্রযান-৩ মিশনটি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং এর সফলতা ইসরোকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় উচ্চতর স্থানে নিয়ে যাবে। চাঁদে প্রেরিত এই মিশনটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি এবং মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।