মঙ্গলবার, অক্টোবর ৮, ২০২৪
শিরোনামঃ
||নড়াইলে হরিলীলামৃত স্কু্লের শিক্ষকদের মাঝে সম্মানী প্রদান ও আলোচনা সভা||মধ্যরাতে হোটেলে রুমের কড়া নাড়তেন এক অভিনেতা: মল্লিকা||আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন: জামায়াতের আমির||নড়াইল সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা||শৈলকুপা সিটি কলেজের শিক্ষকদের পরিচিতি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত||বিশ্ব শিক্ষক দিবসে দি নড়াইল এডুকেশন সোসাইটি গুণী শিক্ষক সম্মাননা||শিক্ষার মান উন্নত করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে: শারমিন আক্তার||ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে প্রাণ গেল ৩৪ জনের||সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র ৭ দিনের রিমান্ডে||নড়াইলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যুবকের মৃত্যু||আবার মা হচ্ছেন কোয়েল মল্লিক||দল বা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে আর বিভক্ত নয়: ডা. শফিকুর রহমান||তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ে করলেন রশিদ খান||ইরানের তেল খনিতে হামলা নিয়ে আলোচনা চলছে: বাইডেন||গুচ্ছের চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষা শনিবার থেকে, ক্লাস শুরু ২০ অক্টোবর
Homeজাতীয়স্বামী ও দেবরের জন্য ভাত রেঁধে অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রী রোজিনা!লাশ হয়ে ফিরলেন...

স্বামী ও দেবরের জন্য ভাত রেঁধে অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রী রোজিনা!লাশ হয়ে ফিরলেন দুজনই

সকালে  ঘুম থেকে উঠে ফসলের খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন মিরান শেখ (৪০)। বাড়ি ফিরে ভাত খাবেন বলেছিলেন। তাঁর স্ত্রী রোজিনা বেগম ভাত রান্না করে রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বামী মিরান আর সেই ভাত খেতে পারেননি। প্রতিপক্ষের হামলায়  মিরান ও তাঁর ভাই জিয়ারুল নিহত হয়েছেন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পারমল্লিকপুর গ্রামে নিহত মিরানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বামীর শোকে রোজিনা বেগম বিলাপ করছেন। বলছেন, আর কোনো দিন তাঁর স্বামী ভাত খাবেন না, এ ভাত তিনি (রোজিনা) কীভাবে খাবেন?
গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে  বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পারমল্লিকপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই মিরান শেখ ও জিয়ারুল শেখ (৩৮) নিহত হয়েছেন। তাঁরা দুজনই কৃষিজীবী। দুজনই ধারালো অস্ত্রের কোপে ঘটনাস্থলে মারা যান। আহত হয়েছেন মিরান ও জিয়ারুলের ছোট ভাই ইরান শেখ (৩৬)। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। আহত অন্য দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন একই গ্রামের আরিফুজ্জামান (৩৬) ও অহিদ খাঁ (৪৬)।
নিহত মিরান শেখের ফসলি কোনো জমিজমা নেই। বর্গাজমি চাষ করে তাঁদের সংসার চলত। স্বামীকে হারিয়ে এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকবেন, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন মিরানের স্ত্রী রোজিনা বেগম। মিরান শেখের মা-বাবা মারা গেছেন আগেই। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে মিরানের সংসার ছিল। বড় মেয়ে মিতু একাদশ শ্রেণিতে পড়ে, মেজ মেয়ে হাবিবা চতুর্থ শ্রেণিতে, আর ছোট ছেলে আবু ওবায়দার বয়স পাঁচ বছর।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিএনপির দুই নেতার দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। দুজনই পারমল্লিকপুর গ্রমের বাসিন্দা। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম ফেরদৌস রহমান। অন্য পক্ষের নেতৃত্বে লোহাগড়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি মাহমুদ খান। নিহত দুই ভাই ফেরদৌস রহমান পক্ষের। এ ঘটনায় ‘এলাকায় অধিপত্য নিয়ে বিএনপির দুই নেতার দ্বন্দ্ব।
এ বিষয়ে এস এম ফেরদৌস রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাহমুদ খান পক্ষের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ আছে। আজ তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাঁদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে।
মাহমুদ খান পক্ষের লোকজন আত্মগোপনে চলা যাওয়ায় হামলার অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী সুলতানুজ্জামান বলেন, এটি বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব নয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। তারই জের ধরে ওই সংঘর্ষ হয়েছে।
নিহত মিরান ও জিয়ারুলের আলাদা সংসার ছিল। জিয়ারুলের আয়ের ওপর চলত তাঁর পাঁচ সদস্যের পরিবার। জিয়ারুলের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সুবর্ণা নবম শ্রেণিতে ও ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আর ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ বছর। বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই। নেই আর কোনো আয়ও। অন্যের জমি চাষ করে চলত জিয়ারুলের সংসার।  তাঁদের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়। জিয়ারুলের স্ত্রী শামসুন্নাহার ডুকরে কেঁদে বলেন, সংসার চালানোর কেউ নেই। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে তিনি কীভাবে বেঁচে থাকবেন বুঝতে পারছেন না।
Stay Connected
16,985FansLike
2,458FollowersFollow
61,453SubscribersSubscribe
সর্বশেষ খবর
আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here