প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে করার বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে সরকারের ঘনিষ্টপক্ষ জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকেও আনুপাতিক হারে নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেবল বিএনপি দৃঢ়ভাবে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের বিপক্ষে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দলটিকে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা চলছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল, বিএনপির উচ্চপর্যায় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এসব বিষয় জানা গেছে। গত কয়েক দিনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে বেরিয়ে এসেছে, আনুপাতিক হারে নির্বাচন পদ্ধতি বাস্তবায়নের পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে।
এরমধ্যে অন্যতম ড. ইউনূস সরকারের দৃশ্যমান পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় পর্বটি হচ্ছে— আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে আগামী ২৫ সালের শেষে ও ২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচনের ইঙ্গিত তিনি নিজেই দিয়েছেন। সম্ভাব্য এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও অধিকতর গ্রহণযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের সঙ্গে যুক্ত ঘনিষ্ট প্রায় সবগুলো পক্ষ আনুপাতিক হারে নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মতো আবারও কোনও দল ‘একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারকারী’ হবে— এই আশঙ্কাকে সামনে রেখে কয়েকটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রাজনীতিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, দেশে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের জন্য বাম ধারার দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের পক্ষে মত জানিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিটিতে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আগামী নির্বাচন আনুপাতিক হারে করার জন্য সিপিবি, বাসদ, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণধিকার পরিষদের নেতারা প্রকাশ্যেই কথা বলছেন। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও ভারসাম্যমূলক শাসনরীতি স্থায়ী করার জন্য আনুপাতিক হারে নির্বাচনের পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তাব দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন রয়েছে, তারা পদ্ধতি নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করবেন। আমরাও ডিসকাশন করবো। কমিশন কী বলে আমরা তার অপেক্ষা করছি। ২০২২ সালের যে আইন, সে আইনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া অসম্ভব।’
যদিও এই বিষয়ে বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপতে যুক্ত বা সমমনা দলগুলোর ভাষ্য— জাতীয় নির্বাচন প্রচলিত পদ্ধতিতেই হোক। প্রয়োজনে দ্বিকক্ষ নির্বাচনে ভোটের আনুপাতিক হার বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
‘আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে সংসদে আওয়ামী লীগের অবস্থান শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য এই প্রক্রিয়াটিকে সামনে আনা হয়েছে’, বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য কথা বলেন।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে সংসদের ভোটের আনুপাতিক হার বিবেচনা করে সংসদের উচ্চ কক্ষ মনোনীত হতে পারে।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ মনে করেন, দেশ আনুপাতিক হারে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত না। এই বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজনৈতিক নির্বাচিত সরকার দরকার।
গত ১৫ ডিসেম্বর বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে আন্দালিভ রহমান বলেন, ‘আমরা বর্তমান অবস্থাতেই থাকতে চাই। এটা করতে গেলে সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। এলাকাভিত্তিক এমপি থাকবে না। এলাকার উন্নয়নের প্রশ্ন এর সঙ্গে জড়িত। সিস্টেম খারাপ না, কিন্তু এটা ম্যাসিভ ওয়ার্ক, যা নির্বাচিত সরকার করতে পারে।’
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিমের ভাষ্য, ‘দুনিয়ার নানা দেশে আনুপাতিক হারে নির্বাচন আছে, সেসব দেশে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। ওই সব দেশের শিক্ষার হারও অনেক বেশি। বাংলাদেশে এ পদ্ধতি নিয়ে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন নাই।’
বাংলাদেশ এলডিপির এই সভাপতি আরও যোগ করেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশে অনেক কিছুই আছে— যা বাংলাদেশে নাই। এখানে আবেগ বা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও সুযোগ নাই। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন নাই।’
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম একজন নেতা বলেন, ‘প্রথমত দরকার নির্বাচনের স্থায়ী পদ্ধতি করা। সাংবিধানিকভাবে স্থায়ী নির্বাচন পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে, এর সময়সীমা বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো হবে কিনা— এসব প্রশ্ন আসছে এখন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো একটি অভ্যুত্থানের সরকার বলে পরবর্তী নির্বাচনকালীন সরকার থেকে ‘তত্ত্বাবধায়ক রূপে’ ফিরতে পারে। একইসঙ্গে বর্তমান সরকারকে জবাবদিহির আওতার মধ্যেও থাকতে হবে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপিকে বলা হয়েছে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের বিষয়ে। এক্ষেত্রে আরও আলোচনার অবকাশ আছে। বিশেষত আনুপাতিক পদ্ধতির অনেক রূপ রয়েছে। নানা ফরমেশনে বিশ্বে প্রচলন আছে। এক্ষেত্রে বিএনপির নেতৃত্ব উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনে আনুপাতিক পদ্ধতির পক্ষে মত দিতে পারেন।’
জানতে চাইলে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘আমরা সব সময় ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমোক্রেসি স্টাইলে পরিচালিত হয়ে এসেছি। সেখানে আনুপাতিক পদ্ধতি নাই। পৃথিবীর যেসব দেশ ‘ওয়েস্ট মিনিস্টার’ ফলো করে, আমরা তাতে আমরা অভ্যস্ত।’’
ইকবাল হাসান মাহমুদের ব্যাখ্যা, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, তারপর শ্রীলঙ্কা— এসব দেশেও নাই। দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই এ বিষয়টি বিবেচনা করছে না।’
তবে বিএনপির একজন উচ্চপর্যায়ের নেতা মনে করেন, ‘বিএনপি চাপে পড়ে আনুপাতিক হারে নির্বাচনে গেলে পস্তাতে হতে পারে। বিশেষ করে সাধারণভাবে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট করলে বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে বেশি।’
দলের দায়িত্বশীল একজনের ব্যাখ্যা, আগামী নির্বাচনে বিএনপির সরাসরি বিরোধী পক্ষ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’
‘এক্ষেত্রে ভোটের হিসাবে প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন করলে প্রতি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের ভোটে ৫-১০ হাজারের পার্থক্য করে দেবে। আওয়ামী লীগের সমর্থিত ভোটের বাইরে বাকি ভোটগুলো দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এ কারণে ভোটের টোটাল পার্সেন্টেজ হিসাব করলে, আনুপাতিক হারে বিএনপি এগিয়ে থাকবে’— এমন পর্যবেক্ষণ এই দায়িত্বশীলের।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য এই দায়িত্বশীল জানান, ভোটের এই হিসাবের কারণে শত্রুমিত্র চিনতে হবে বিএনপিকে। আর এ কারণে সিনিয়র নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের তো বলাই আছে আমরা যুগপৎ সঙ্গীদের নিয়েই নির্বাচন করবো। আমরা নির্বাচনে মেজরিটি পেলে যুগপতের সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবো— এসব বিষয় তো ইতোমধ্যে স্পষ্ট। আমরা সবাইকে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবো।’
এক্ষেত্রে ছাত্রদের নতুন দল বা জামায়াত বা ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। ৩১ দফাকে সমর্থন জানিয়ে কেউ আসতে চাইলে মানা নেই। ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ৬৫ টি রাজনৈতিক দল সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি— প্রত্যেকে ৩১ দফাকে সমর্থন দিয়েছে। সুতরাং, আমাদের ৩১ দফাকে সমর্থন করলে ওয়েলকাম।’
সংখ্যালঘু ও শ্রমিকদের রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা
বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, দেশে দৃশ্যমান সংস্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কার। ইতোমধ্যে আদালতের রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, গণভোটসহ বিভিন্ন বিষয় সামনে এসেছে।
পুরনো তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতির মাধ্যমেই নির্বাচন হবে কিনা, বা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার ধরন ও সময়সীমা কী হতে পারে— এ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বিএনপি জেনেছে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের দিকে অনেকপক্ষের ঝোঁক রয়েছে। এক্ষেত্রে খুব একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে না পারলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে সুবিধা পাবে কিনা, এ প্রশ্নও রয়েছে সূত্রের।
‘ইতোমধ্যে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু মাইনরিটি পার্টি, শ্রমিকদের বিশেষায়িত লেবার পার্টি— এ ধরনের পেশাভিত্তিক দাবি-দাওয়া ও সামাজিক অবস্থানকে জাতীয়ভাবে নেতৃত্বে আনার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল গঠন হতে পারে’ এমন দাবি করেছেন বিএনপির একজন দায়িত্বশীল।
তিনি মনে করেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট হলে বিজয়ী ভোটারদের বাইরে সমাজে অন্য অংশের প্রতিনিধিত্ব কমে আসে বা প্রায় নেই। এক্ষেত্রে সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আনুপাতিক পদ্ধতি চাইতে পারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট-পক্ষ। অর্থাৎ ভোটে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দলই তখন প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারবে এবং অধিকতর মত উঠে আসার সম্ভাবনা নিশ্চিত করে।’
‘মোটা দাগে কোনও দলকেই পুরনো দিনের মতো একচ্ছত্র সংসদ প্রাপ্তির সুযোগ অন্তর্বর্তী সরকার দেবে না’ এমন দাবিও করেন তিনি।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সূত্র জানায়, সংসদের সংরক্ষিত আসনগুলোতেও বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব এসেছে।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে গণতন্ত্র বিষয়ক মার্কিন একটি সংস্থার নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সরকারের কাছে সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব যাবে। নারীদের ক্ষমতায়নের প্রশ্নটি আরও জোরালোভাবে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এই প্রস্তাব দিচ্ছে সংস্থাটি।
আওয়ামী লীগ কি প্রস্তাবনা দিয়েছে?
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলের একাধিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সরকারের কাছে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তবে কী ফরম্যাটে, কার মাধ্যমে তা নিশ্চিত হতে পারেনি বাংলা ট্রিবিউন। রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আনুপাতিক হারে নির্বাচন-পদ্ধতির কথা জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত— এমন কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন এই প্রতিবেদক।
পরে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগপন্থি একজন প্রভাবশালী আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ হলেও তিনি কোনও মন্তব্য প্রদানে নিরব অসম্মতি জানান।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবিধান বা নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনে কোনও চিঠি দেওয়া হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘না, আমার মনে হয় না আওয়ামী লীগের প্রস্তাব এসেছে।’
নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী বলছে
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন পক্ষ ইতোমধ্যে কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে আনুপাতিক হারে নির্বাচন পদ্ধতির প্রস্তাব করেছে। তারা চেয়েছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন যেন প্রস্তাব রাখে।
যদিও কমিশনের সদস্যরা এই মতের বিরোধিতা করে জানিয়েছেন, বিষয়টি সাংবিধানিক প্রশ্ন। এক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সংস্কারের বিষয়টি সংবিধান সংস্কার কমিশন করবে, বলে জানায় সূত্র।
কমিশনের একজন সদস্য সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে উল্লেখ করেন, জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে সংস্কার কমিশন সুপারিশ করবে না। এটা সংবিধান সংস্কার কমিশন দেখবে। তবে কমিশন নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব সুপারিশ করবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে মার্কা তুলে দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।
জানতে চাইলে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কমিশনের প্রধান অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের এখতিয়ার নয়। এটি সংবিধানের বিষয়। আমরা সেভাবেই প্রস্তাব দেবো।’ দ্রুতই সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে, বলে জানান কমিশন প্রধান।