বিয়ের অনুষ্ঠান অংশ নিতে পরিবারের সঙ্গে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে নানা বাড়িতে এসেছিল সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাজিদ (১৩)। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল পার্শ্ববর্তী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ে। সেখানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভোগাই নদীতে গোসলে নেমে ডুবে যায় সে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে নিখোঁজ হয় তার মামাতো ভাই মিহানও (১৮)। খবর পেয়ে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। এই দুই তরুণের মৃত্যুতে বিয়ে বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মৃত সাজিদ ময়মনসিংহ জেলা সদরের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের পুত্র। সে স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আর মিহান একই জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার স্কুল শিক্ষক আহমদ আলীর পুত্র। সে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও স্থানীয়রা জানান, একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আত্মীয়-স্বজনরা হালুয়াঘাটে এসেছিল। শুক্রবার বিয়ে শেষে শনিবার দুপুরের দিকে নারী ও শিশুসহ মোট ১৮ জন মিলে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ের ভারত-ঘেঁষা পানিহাতা পর্যটন এলাকায় ঘুরতে যান। সেখানে অন্যদের সঙ্গে সিমান্তবর্তী ভোগাই নদীতে গোসল করতে নেমেছিল সাজিদ ও মিহান। বালুচরে হাঁটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পা পিছলে সাজিদ নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে। তাকে বাঁচাতে নিহান এগিয়ে গেলে জড়াজড়ি করে দুজনই তলিয়ে যায়।
এসময় তাদের সঙ্গে থাকা সাজিদের মামা সোহরাব ভাগনে ও ভাতিজাকে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিলেও পাথরের আঘাত পেয়ে পড়ে যান তিনি। ততক্ষণে দুই ভাই নিখোঁজ হয়ে যায়। বিকালে জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দুই ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, বেড়াতে গিয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে বিয়ে-বাড়িতে এখন শোকের মাতম। শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাদের নিজ নিজ এলাকাতেও।
ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের জামালপুর ইউনিটের লিডার আবু বক্কর সিদ্দীক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নদীর ওই অংশের গভীরতা বেশি থাকায় ছেলে দুটি পানিতে ডুবে গিয়ে মারা যায়। আমরা তাদের লাশ উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের হেফাজতে দিয়েছি।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। দুজনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।