‘ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও উদ্বেগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিনি বিষয়ক ডেপুটি পলিটিক্যাল কাউন্সেলর মাইক কেসি। জেরুজালেমে তার কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাকে অপমানজনক বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন কেসি। আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে কেসি বলেন, ‘এটি সত্যিই লজ্জাজনক … আমরা যেভাবে ইসরায়েলি সরকারের দাবির কাছে নতিস্বীকার করি এবং ইসরায়েলি সরকার যা করছে তার সমর্থন চালিয়ে যাই, যদিও আমরা জানি এটি ভুল।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, আমি অন্য কোনও দেশে এমনটি দেখিনি যেখানে আমি কাজ করেছি।
মার্কিন সরকারের ইসরায়েলের প্রতি অটল সমর্থনের কারণে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন কেসি। তিনি বর্ণনা করেছেন, অনেক আগেই গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তার।
এই সপ্তাহে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রথম তার পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হয়। এটি মার্কিন কর্মকর্তাদের সর্বশেষ প্রতিবাদ, যারা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গাজার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের প্রতি সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থনে ক্ষুব্ধ।
গাজায় ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় এ পর্যন্ত ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই সংঘাত গাজাকে গভীর মানবিক সংকটে নিমজ্জিত করেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, এমনকি গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে।
কিন্তু বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এর ফলে ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং সমর্থকরা বিদায়ী ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টকে ‘জেনোসাইড জো’ বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ইসরায়েলকে অন্তত ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি অনুমান করেছেন যে গাজার যুদ্ধ শুরুর পর বাইডেন প্রশাসন অতিরিক্ত ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে।
সাক্ষাৎকারে কেসি বলেছেন, জেরুজালেমে তার কাজ মূলত গাজার পরিস্থিতি, মানবিক উদ্বেগ থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেদন লেখা ছিল।