হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণে ‘আমদানি নিয়ন্ত্রিত’ বিদেশি সিগারেট আসছে। প্রায় প্রতিটি ফ্লাইটেই একাধিক যাত্রীর কাছ থেকে জব্দ হচ্ছে সিগারেট। ব্যাগেজ রুলসে প্রতি যাত্রী এক কার্টন সিগারেট আনার সুবিধা পান। তবে সম্প্রতি লাগেজ ভর্তি করে সিগারেট আনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্য, এ যেন বিদেশি সিগারেটের আনার ঢেউ উঠেছে।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার আল-আমীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সিগারেট আমদানি নিয়ন্ত্রিত পণ্য। একজন যাত্রী ট্যাক্স ছাড়াই এক কার্টন সিগারেট আনতে পারেন। অথচ বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিপুল পরিমাণ সিগারেট আনছেন যাত্রীরা। আমরা সেগুলোও জব্দ করছি।
একটির বেশি দুটি কার্টন হলেও জব্দ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে ব্যাগেজ রুলসের বাইরে শুধু সিগারেট নয়, যে কোন পণ্য আনলেই আমরা তা জব্দ করছি। ট্যাক্সেবল আইটেম হলে সেগুলো ট্যাক্সেশন সম্পন্ন করে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। আর সিগারেট বা অ্যালকোহলের মতো পণ্য আমরা ফেরত দেই না।’
বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে প্রায় ১ কোটি টাকার কাছাকাছি সিগারেট জব্দ করা হয়েছে। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় আসলে অনেক বেশি।
সূত্র জানায়, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে কুয়েত এয়ারলাইন্সের তিন জন যাত্রীর কাছ থেকে মোট ৮০৫ কার্টনের বড় একটি বিদেশি সিগারেটের চালান জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৮ লাখ টাকা। এর আগের দিন ১৮ ডিসেম্বর দুবাই থেকে আসা আরেক যাত্রীর কাছ থেকে ১৯৫ কার্টন জব্দ করা হয়। তারও আগের দিন ১৭ ডিসেম্বর কাস্টমস দুবাই থেকে আসা ৩ যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশির সময় ৪১০ কার্টন জব্দ করা হয়। ওই একই দিনে দুবাই থেকে আসা অপর এক যাত্রীর কাছ থেকে ১৯৫ কার্টন সিগারেট জব্দ করা হয়।
আর গত ১৫ ডিসেম্বর ৪৫০ কার্টন সিগারেট বেল্টে রেখেই কে বা কারা পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে প্রিভেন্টিভ টিম সেগুলো জব্দ করে। গত ১৪ ডিসেম্বর দুবাই থেকে আসা দুই যাত্রীর ব্যাগেজ তল্লাশি করে ৫৬৭ কার্টন সিগারেট জব্দ করা হয়। একই দিন দুবাই থেকে আসা অপর এক যাত্রীর কাছ থেকেও ১৮৪ কার্টন জব্দ করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার আল-আমীন বলেন, গত প্রায় এক সপ্তাহে যে পরিমাণ সিগারেট জব্দ করা হয়েছে, সেগুলোর মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকার কাছাকাছি হবে। এক শ্রেণির যাত্রী কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই সিগারেটগুলো বাইরে বের করার চেষ্টা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু আইনি প্রক্রিয়া শেষে সিগারেটগুলো নিলামে তুলে বিক্রি করে দেওয়া হবে।’
ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোবারা খানম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধে সর্বাত্মক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি আরও শক্তিশালী করেছি। এ কারণে আমাদের রেজাল্টও ভালো হচ্ছে। সম্প্রতি স্বর্ণসহ অন্যান্য পণ্য আটকের ঘটনাও বেড়েছে।
‘আমদানি নিয়ন্ত্রিত’ পণ্য হিসেবে বিবেচিত সিগারেট শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বের করানোর একটি চেষ্টা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা সতর্ক থাকার কারণে বড় বড় চালান আটক করতে সক্ষম হচ্ছি। বিমানবন্দরে সতর্কতা বাড়িয়েছি।’