• ঢাকা, বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
ঘন কুয়াশায় বাস-মাহেন্দ্রর মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩ শৈলকূপায়।গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ শৈলকুপা সব ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের আশ্বাস, অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার অস্ত্র মামলায় সম্রাটের বিচার শুরু, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি দক্ষিণ কোরিয়ায় এবার যাত্রীবাহী বিমানে আগুন সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ফের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ যোগ দেবেন জায়মা রহমান কোনো দল জনবিচ্ছিন্ন হলে ৫ আগস্টের মতো পরিণতি হবে: তারেক রহমান আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের চেয়ে সুবিধা বেশি দেখতে পাচ্ছি : ইসি সানাউল্লাহ নড়াইলে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা

জাহাজে সাত খুন, পরিচয় মিলেছে ছয় জনের, যা জানালেন সহকর্মীরা

রিপোর্টার নাম: / ৩০ জন দেখেছে
আপডেট : সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
জাহাজে সাত খুন, পরিচয় মিলেছে ছয় জনের, যা জানালেন সহকর্মীরা

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা এমভি আল-বাখেরা জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাত জনের মধ্যে ছয় জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় একই কোম্পানির অপর জাহাজের (মুগনি-৩) নাবিকরা এই ছয় জনের পরিচয় জানিয়েছেন। তবে নিহতদের পরিচয়ের বিষয়ে এখনও জেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি।

সহকর্মীদের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতরা হলেন জাহাজটির চালক (মাস্টার) কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহত ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইলে। জুয়েলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন এমভি আল-বাখেরা জাহাজটি থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ সময় আরও তিন জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়। তবে কারা তাদের হত্যা করেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ধারণা জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে নিহতদের বিস্তারিত, নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছি আমরা।’

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লাশ ও আহত ব্যক্তিদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলা কাটা। পুলিশের ধারণা, রবিবার রাতে দুর্বৃত্তরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিরা জাহাজটির কর্মী।

লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল জানায়, ১৯ ডিসেম্বর আল-বাখেরা জাহাজটিকে ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এটির ধারণক্ষমতা ৮০০ মেট্রিক টন। এর পণ্য পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স হামিদিয়া এন্টারপ্রাইজ। বরাদ্দ পাওয়ার পর জাহাজটিতে ২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কাফকো জেটি থেকে ৭২০ টন ইউরিয়া সার বোঝাই করা হয়। রবিবার ভোরে সার নিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। রাতে হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করার কথা ছিল। এই সার ছিল বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি)।

যা জানালেন সহকর্মীরা

জাহাজটির মালিক দিপলু রানা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রওনা হওয়ার পর রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় চালকের (মাস্টার) সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়। তখন চালক জানান মেঘনা নদীতে তারা জাহাজের মধ্যেই আছেন। তবে সকালে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও কেউ সাড়া দেননি। বারবার যোগাযোগ করে কাউকে না পেয়ে আমাদের আরেকটি জাহাজের (মুগনি-৩) নাবিকদের বিষয়টি জানাই। ওই জাহাজ এমভি আল বাখেরার কাছাকাছি ছিল। তারা আল-বাখেরার কাছাকাছি যাওয়ার পরই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পারেন।’

নিহতদের সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলাকাটা।

মুগনি-৩ জাহাজের চালক মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া ও গ্রিজার মো. মাসুদ জানিয়েছেন, আমরা খালি জাহাজ নিয়ে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় মালিকের ফোন পেয়ে দুপুর ১টায় আমরা আল-বাখেরা জাহাজের কাছে যাই। সেখানে গিয়ে আল-বাখেরা জাহাজে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচ জনকে পড়ে থাকতে দেখেন আমাদের সুকানি রবিউল। তারা জীবিত ছিলেন না। পাঁচ জনের বাইরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জন জাহাজে পড়ে ছিলেন। দ্রুত বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানাই। তখন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়। দেখে বোঝা যাচ্ছে তাদের কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। 

পুলিশের ধারণা, ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যা

নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেছেন, বিকাল সাড়ে ৩টায় নোঙর করে রাখা এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সময় আরও তিন জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। ধারণা করছি, ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, সোমবার বিকালে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বর থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল ওই জাহাজে ডাকাতরা হামলা করেছে। খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে জাহাজের পাঁচটি কক্ষে পাঁচ জনের লাশ পেয়েছি আমরা। আরও তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। আট জনই জাহাজটিতে ছিলেন।

সবার শরীরে অস্ত্রের আঘাত, কারও কারও গলাকাটা

নিহত সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল, কারও কারও ছিল গলাকাটা- এমনটি জানিয়েছেন চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালি কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। পাশাপাশি সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

ডিসি বললেন তদন্ত চলছে

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছেন তারা আট জন ছিলেন জাহাজে। ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। কারণ শ্বাসনালি কাটা থাকায় কথা বলতে পারছিলেন না। ডাকাতি কিংবা অন্য কোনও কারণেও ঘটনাটি ঘটতে পারে। তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’

আরও পড়ুন:

জাহাজে ৫ লাশ, হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু

চাঁদপুরে জাহাজে মিললো ৫ জনের লাশ, আহত অবস্থায় উদ্ধার ৩

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ