বাঙালি মুসলমান বহিরাগত নন বলে দাবি করে ইউনিভার্সিটি ব্রুনেই দারুসসালামের শিক্ষক ইফতেখার ইকবাল বলেছেন, বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের সংকট আমি দেখি না। দিল্লির সঙ্গে আমাদের দূরত্ব সাম্প্রদায়িক ইস্যু না, এটা পরিবেশগত ও ভৌগোলিক কারণে। দিল্লিতে মোগলরা শাসন করে বাংলায় এসে আর যেতে চাননি৷ কারণ দিল্লি বহুদূর। যেমন হুমায়ুন বাংলায় এসে প্রকৃতির প্রেমে পড়ে আর যেতে চাননি। যার জন্য তাকে রাজ্যও হারাতে হয়েছিল।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলামোটর রূপায়ন সেন্টারে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘রাজনৈতিক বক্তৃতামালা সিরিজ-১’ বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের বিষয় ছিল- ‘বাংলা বদ্বীপের ইতিহাস মেরামতি: কিছু দিকচিহ্ন’।
ইফতেখার ইকবাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি হচ্ছে, ঘুষ চাচ্ছে। আমরা এগুলোর প্রতিবাদ করতে পারিনি। এগুলোর প্রতিবাদ করেছে হাসনাতরা। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পরবর্তী দুটি প্রজন্ম কাজ করেছে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের তিনটি জাতি নৃগোষ্ঠীর ধারা রয়েছে। একটি পশ্চিম দিক থেকে— যাদেরকে আমরা বলছি অস্ট্রিক, আরেকটি হলো উত্তর দিক থেকে— যাদেরকে আমরা বলি আর্য। বাঙালি জাতির ডিএনএ’র সঙ্গে মিল রয়েছে পূর্ব থেকে আসা গোষ্ঠীদের। তিন জাতি নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক জীবনাচরণের হচ্ছে। এখানে একক কোনও জাতি কাজ করছে না। এখানে প্রি ডোমিনেন্ট হচ্ছে বেশি। আর একে প্রতিবাদ করার জন্য সব সময়ই একটি বিপ্লবী গোষ্ঠী প্রতিবাদ করে আসছে। প্রতিবাদ করার কারণ— যে তিনটি কসমোপলিটান নৃগোষ্ঠী রয়েছে, তার একটি আরেকটিকে ডমিনেট করতে চায়। বিপ্লব হলেও কিন্তু সেটার কোনও স্থায়ী সমাধান হয় নি। সেটির সমাধানের আমাদের ইতিহাসের ফাঁকফোকর গুলো মেরামত প্রয়োজন।
এ সময় চব্বিশ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ইতিহাস মেরামত কেনও প্রয়োজন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকে এই আন্দোলনকে বিপ্লব না বললেও, আমি মনে করি এটা বিপ্লব। বিপ্লব তিনভাবে হয়। মন ও মগজ; একে আমি ট্রান্সলেট করবো কোথায়, শেষটি হলো তা বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এটিকে করতে হলে অনেকগুলো জায়গায় কাজ করতে হবে। তার একটি হলো ইতিহাসের মেরামত।
নাগরিক কমিটির সদস্য সারোয়ার তুষার সঞ্চালনায় মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।