পাকিস্তানে সামরিক আদালতে ২৫ জন বেসামরিক নাগরিকের সাম্প্রতিক সাজা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে এর আগে উদ্বেগ জানিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
পোস্টে ম্যাথিউ মিলার বলেন,পাকিস্তানি বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক ট্রাইব্যুনালে সাজা দেওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে ন্যায়বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এই সামরিক আদালতগুলোতে বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার গ্যারান্টি নেই।
এর আগে যুক্তরাজ্যের ফরেন,কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করে।
এক বিবৃতিতে এফসিডিও বলেছে, ‘যুক্তরাজ্য পাকিস্তানের নিজস্ব আইনি প্রক্রিয়ার ওপর সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানালেও,সামরিক আদালতে বেসামরিক নাগরিকদের বিচার স্বচ্ছতা ও স্বাধীন মূল্যায়নের অভাব এবং ন্যায়বিচারের অধিকারের পরিপন্থী। আমরা পাকিস্তান সরকারকে আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদ (আইসিসিপিআর)-এর অধীনে তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাই।
গত বছরের ৯ই মে দেশব্যাপী দাঙ্গায় অংশগ্রহণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ২৫ বেসামরিক নাগরিককে দুই থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের বেসামরিক আদালত। এই দাঙ্গা ২০২৩ সালের ৯ই মে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর শুরু হয়।
রায় ঘোষণার একদিন পর, ইইউর একজন মুখপাত্রও এই রায়গুলোকে ‘পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদের (আইসিসিপিআর) অধীনে নেওয়া বাধ্যবাধকতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ইইউ পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, এবং জিএসপি+ ব্যবস্থাটি ইউরোপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
পাকিস্তানের সংবিধানে সংরক্ষিত ন্যায়বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ করে এই অধিকারগুলোর প্রতি সম্মান জানাতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর কোনও বিবৃতির বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে পিটিআই এই সাজাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আর আইনজীবীরা বিচার প্রক্রিয়া এবং অতিরিক্ত উচ্চ দোষারোপের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে ‘যৌক্তিক এবং যথার্থ’ বলেও সমর্থন করেছে পিটিআই। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে এই পদক্ষেপ পাকিস্তানকে বৈশ্বিক মঞ্চে আরও বিচ্ছিন্ন করতে পারে।