ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় নিয়ে কিছুটা অগ্রগতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইসরায়েলি সংসদ নেসেটের নিয়মিত উত্তপ্ত অধিবেশনে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) তিনি বলেছেন, আমাদের প্রচেষ্টায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে এবং এর পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার এখন আর বেঁচে নেই; হিজবুল্লাহ ও ইরান থেকে হামাস যে সাহায্যের প্রত্যাশা করেছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে এবং হামাস নিজেই ক্রমাগত আঘাতের মুখে পড়ছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, এখনও অনেক কাজ বাকি, তবে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সব জিম্মিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমাদের সুখ পূর্ণ হতে পারে না। আমরা প্রতিটি স্তরে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং যতক্ষণ না প্রত্যেককে শত্রু এলাকা থেকে ফিরিয়ে আনা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত থামব না।
নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইসরায়েলের সামরিক সাফল্য মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করছে। তিনি বলেন, আমাদের ধারাবাহিক সাফল্য এবং বিজয় শুধু আমাদের অঞ্চলে নয়, সারা বিশ্বের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। এমনকি আমাদের শত্রুরাও আমাদের অর্জনের মাত্রা স্বীকার করছে।
হামাস ও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, তারা তাদের নেতাদের একের পর এক হারাচ্ছে। এখন আর কোনও স্তর অবশিষ্ট নেই।
নেতানিয়াহু বিরোধীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, যদি ইসরায়েল গাজা প্রবেশ করার আগেই যুদ্ধ থামিয়ে দিত, যেমন বিরোধীরা দাবি করেছিল, তবে এটি ইরান ও তাদের দোসরদের জন্য বিজয় হিসেবে গণ্য হত এবং কোনও জিম্মির মুক্তি সম্ভব হতো না। বারবার প্রমাণিত হয়েছে কে সঠিক ও কে ভুল।
ইরানের বিষয়ে তিনি বলেন, ইরান আমাদের ধ্বংস করার হুমকি দিচ্ছে, কিন্তু আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে তাদেরকে কোনও পারমাণবিক বা অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সুযোগ দেব না।
ইয়েমেন প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমাদের সাম্প্রতিক হামলা হুথিদের গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে। এটি প্রথম নয় এবং শেষও নয়।
নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সাফল্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে শান্তির সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যে চারটি ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি করেছি। ভবিষ্যতে আরও চুক্তি হবে।
তিনি স্বীকার করেছেন, ফিলিস্তিন সমস্যাটি এখনও একটি চ্যালেঞ্জ। তবে দাবি করেছেন, আমাদের আরব প্রতিবেশীরা পরিস্থিতি বুঝতে পারছে এবং তারা ইসরায়েলকে একটি আঞ্চলিক শক্তি এবং নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার মিত্র হিসেবে দেখছে। আমরা এই সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগাব।