সিরিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমেদ আল-শারা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসব গোষ্ঠী একত্রিত হবে বলে জানিয়েছে সিরিয়ার নতুন প্রশাসন। এটিকে আসাদের পতনের পর দেশটিতে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার নতুন প্রশাসনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আল-শারা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের মধ্যে আলোচনার পর সব গোষ্ঠী বিলুপ্ত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দি নেতৃত্বাধীন ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়।
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে সাবেক বিদ্রোহী যোদ্ধা এবং বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আল জাজিরার রিপোর্টার রেসুল সেরদার বলেছেন, আসাদ সরকারের পতনের পর এটি সম্ভবত সিরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। আসাদের শাসনের পতনের পর বিদ্রোহী যোদ্ধারা দেশব্যাপী বিভিন্ন এলাকা থেকে দামেস্কে জড়ো হয়। এরপর তারা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল দখলে রাখে।
তিনি আরও বলছেন, মূল উদ্বেগ ছিল, দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে সরকারবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাওয়া এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো কীভাবে একীভূত হবে। দীর্ঘ আলোচনার পর আল-শারা জানিয়েছেন যে, সব সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একীভূত হতে সম্মত হয়েছে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
দুই সপ্তাহ আগে এক বিশাল সামরিক অভিযানের মাধ্যমে দামেস্কে ক্ষমতায় আসে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। এরপর নতুন শাসকরা বিদ্রোহী নেতা মুরহাফ আবু কাসরাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়।
আল-শারা আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীসহ দেশে থাকা সব অস্ত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। তিনি পশ্চিমা কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এইচটিএস কোনও প্রতিশোধমূলক অভিযান চালাবে না এবং কোনও ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে নিপীড়ন করবে না।
সিরিয়ার নতুন নেতা বলেছেন, তার প্রধান লক্ষ্য হলো পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং তিনি নতুন কোনও সংঘাতে জড়াতে চান না।
গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এর ফলে দীর্ঘ ১৩ বছরের যুদ্ধের পর আসাদ পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং তার পরিবারের কয়েক দশকের শাসনের অবসান ঘটে। আল-শারার বাহিনী তিন মাসের জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছে।