নড়াইল সদর উপজেলার গোপালপুরে সরকারি ৪টি গাছ প্রকাশ্যে কেটে ২ লক্ষ টাকা লোপাট করেছে স্থানীয় দুইজন। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ২ জনকে অভিযুক্ত করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেছেন ভদ্রবিলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বেবি রানী রায়।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন নড়াইল সদর উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের মৃত শফিউদ্দিন মোল্যার ছেলে গোলাম রব মোল্যা ও ভদ্রবিলা গ্রামের মোহর শেখের ছেলের লিটন শেখ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৯ ডিসেম্বর ভদ্রবিলা ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারের পাশে সরকারি জমির গাছকে নিজের মালিকানা দাবী করে কাটে স্থানীয় গোলাম রব মোল্যা গাছ কাটতে থাকে। এসময় ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বর মাসুম বিল্লাহ সরকারী গাছ কাটতে নিষেধ করে। নিষেধ উপেক্ষা করে তারা গাছগুলো কেটে ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে।
দীর্ঘদিন ধরে এই গাছগুলোর মালিকানা দাবি করে আসছিলেন দিঘলিয়া গ্রামের রব মোল্যা। এরই সুবাদে রব মোল্যার সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে গাছগুলো নেওয়ার চুক্তি হয় লিটনের একপর্যায়ে গত ২৮ ডিসেম্বর গাছগুলো কেটে নেন লিটন শেখ।
ভদ্রবিলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বেবি রানী রায় বলেন, গাছগুলো সরকারি জমিতে ছিলো। গোলাম রব ও লিটন শেখ যোগসাজশে গাছগুলো চুরি করে কেটে বিক্রি করেছেন। গোলাম রব আমাদের কাছে লিটনের সঙ্গে চুক্তির কথা স্বীকার করেছেন। তবে লিটনের কাছ থেকে সে কোনো টাকা পায়নি বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে গোলাম রব মোল্যা জানান,গাছগুলো আমার জায়গায় আমাদের কাগজপত্র আছে,ওগুলো আমি ভদ্রবিলার লিটন শেখের কাছে বিক্রি করেছি,কথার এক পর্যায়ে অন্য আরেক জনকে ফোন ধরিয়ে দেন তিনি,তিনি হুমকীর সুরে বলেন,মামলা হইছে তাতে আপনার সমস্যা কি?।
আরেক অভিযুক্ত লিটন শেখ বলেন, আমি কোনো গাছ কাটিনি,আমার বাড়ি ভদ্রবিলা আর ওটা গোপালপুরে, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বর মাসুম বিল্লাহ বলেন,সরকারী গাছ কাটার খবর পেয়ে আমি গিয়ে দেখি লিটন শেখ ইলেকট্রিক করাত দিয়ে গাছ কেটে নিচ্ছে। আমি তাকে গাছ কাটতে নিষেধ করে আসলে তা শোনেনি,৪টি গাছই কেটে নিয়ে গেছে।
সদর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে,সরকেলডাঙ্গা মৌজার খাস খতিয়ানের ১০৬৮ও ১০৭১ নং দাগের জায়গায় ছিলো ৩টি বড় মেহগনি ও একটি বড় দেবদারু গাছ,যা কেটে বিক্রি করা হয়েছে।
সদর উপজেলা ভ’মি কর্মকর্তা(এসি ল্যান্ড) দেবাশীষ অধিকারী বলেন,আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে গাছগুলো উদ্ধারের কথা বলি,কিন্ত তারা গাছ ফেরত দেয়নি,উল্টো সরকারী অফিস ম্যানেজ করে গাছ কাটা হয়েছে বলে বেড়াচ্ছে। সরকারী গাছ লুট করার অপরাধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ”সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।