রবিবার, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
শিরোনাম:
Homeজাতীয়প্রয়োজনীয় সংস্কার দাবিতে জাকসু নির্বাচনের আলোচনা সভা বর্জন ছাত্রদলের

প্রয়োজনীয় সংস্কার দাবিতে জাকসু নির্বাচনের আলোচনা সভা বর্জন ছাত্রদলের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের পূর্বে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবিতে জাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা সভা দ্বিতীয়বারের মতো বর্জন করেছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) জাবি শাখা। তারা ইসলামী ছাত্র শিবিরকে সভায় আমন্ত্রণ জানানো এবং ‘ফ্যাসিস্ট’ আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে থাকার বিষয়টি তুলে ধরে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে পূর্বনির্ধারিত এই সভাটি রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত হয়।

 

সভায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশের দুইটি ছাত্র ইউনিয়ন গ্রুপ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের দুইটি গ্রুপ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী ছাত্র শিবির এবং কিছু অনিবন্ধিত সংগঠনের তিনজন করে প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। অনিবন্ধিত সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ, আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চ, জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন এবং জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলন।

 

এদিন বেলা ৫টার দিকে সভা শুরুর দিকে ছাত্রদলের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী সভাস্থলে উপস্থিত হয়ে সভা বর্জনের ঘোষণা দেয়।

 

জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু অনিবন্ধিত সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ। তাছাড়া, ১৯৮৯ সালে জাকসু ও ২২টি সক্রিয় সংগঠনের ঘোষণা অনুযায়ী অবাঞ্ছিত ইসলামী ছাত্র শিবিরকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ কারণেই আমরা এই সভা বর্জন করছি।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা প্রশাসনিক ও বিভাগীয় সভাপতির পদে রয়েছেন। তাদের তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে সম্ভব? এছাড়া এখন পর্যন্ত জাকসু সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি।’

 

রুবেল আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে না। কারণ নির্বাচনে হামলাকারী ও নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারে বলে আমরা মনে করছি।’

 

এসময় ছাত্রদল এ বিষয়ে তাদের দাবিসমূহ উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি আকারে জমা দেয়।

 

ওইদিন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর মতো বাম সংগঠনগুলোও সভাটি বর্জন করে এবং ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’ ব্যানারে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের অবস্থান তুলে ধরে।

 

তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা রয়েছেন, বিশেষত প্রশাসন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সোহেল আহমেদ, যিনি ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ছাত্র আন্দোলনে হামলা উস্কে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তোলা হয়।

 

তারা আরও দাবি করেন, বর্তমান প্রশাসনের অধীনে আসন্ন জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। পাশাপাশি ভোটার তালিকার খসড়াতেও অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তালিকায় ছাত্রলীগের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম বাদ পড়েছে, যা নির্বাচনের স্বচ্ছতাকে ক্ষুণ্ণ করবে। এছাড়া, তারা ইসলামী ছাত্র শিবিরকে সভায় আমন্ত্রণ জানানোকে ১৯৮৯ সালের জাকসু ও ২২টি সংগঠনের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন এবং উপাচার্যকে নিরপেক্ষতার প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

 

তবে সেসময় ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলোর বর্জনের মধ্যেও পরিবেশ পরিষদ অন্যান্য আমন্ত্রিত সংগঠনের সঙ্গে সভা চালিয়ে যায়।

 

এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে “পরিবেশ পরিষদ: জাকসু নির্বাচন ২০২৫” এর ব্যানারে একই স্থানে বিভাগীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে বেশিরভাগ প্রতিনিধি যত দ্রুত সম্ভব জাকসু নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here