চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চুক্তি বাতিল করার জন্য বাইডেন প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছে রিপাবলিকান সিনেটরদের একটি দল। অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগে দুই দেশের মধ্যে আরও পাঁচ বছরের জন্য এই সহযোগিতা চুক্তি নবায়ন করা হয়েছিল। মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি প্রকাশিত শুক্রবারের (২০ ডিসেম্বর) একটি প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে লেখা এক চিঠিতে সিনেটর জিম রিশের নেতৃত্বাধীন দলটি দাবি করেছে, দীর্ঘদিন আগেই এ ধরনের সহযোগিতার যৌক্তিক সময় শেষ হয়ে গেছে। বরং চুক্তিটির নবায়নের মাধ্যমে কেবল মার্কিন গবেষণা হস্তগত করার আরও সুযোগ তৈরি হবে।
চুক্তিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাইডেনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এর নবায়ন করে এই বিতর্কিত বিষয়ে মতামত জানানোর সুযোগ থেকে আসন্ন প্রশাসনকে বঞ্চিত করা হলো।
এই চিঠিতে রিশ ছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন সিনেটর জন ব্যারাসো, পিট রিকেটস, টড ইয়াং ও বিল হ্যাগার্টি।
চুক্তিটি প্রথম স্বাক্ষরিত হয় ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে। দুদেশ তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব মোকাবিলায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। সে সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল চীন। ২০১৮ সালে এই চুক্তি নবায়ন করা হয়েছিল। দুদেশের মধ্যে চলমান প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য গত বছর ও চলতি বছর এটি আবারও অস্থায়ীভাবে নবায়ন করা হয় ।
এদিকে, নতুন চুক্তির পরিধি সীমিত ও এতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য বাড়তি সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, চুক্তিটি শুধু মৌলিক গবেষণার উপর সীমাবদ্ধ। এতে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি উন্নয়নের অনুমতি দেওয়া হয় নি।
অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আশ্বস্ত নন রিপাবলিকান সিনেটররা। তাদের আশঙ্কা, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষা ও জ্ঞানের অবৈধ হস্তান্তর প্রতিরোধে পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট নয়।
এই চিঠির বিষয়ে বক্তব্য জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল এপি। তবে তাদের দিক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
রিপাবলিকানদের দাবির সমালোচনা করেছেন ভিলানোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডেবোরাহ সেলিগসন। তিনি বলেছেন, চীনের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতা বন্ধ করলে যুক্তরাষ্ট্রই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের প্রতিযোগী হয়ে উঠেছে। এ কারণেই তাদের সঙ্গে কাজ করলে যুক্তরাষ্ট্র আগের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবে। অথচ সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ না নিয়ে সহযোগিতা বন্ধ করার দাবি তোলা হচ্ছে।