চীনে বয়স্ক রোগীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এক নতুন অর্থনীতি, যেখানে তাদের সেবায় নিয়োজিত ‘মেডিক্যাল সঙ্গী’ পেশার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতালমুখী বয়স্ক ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষিত পেশাজীবীদের সংখ্যা বাড়ছে। এ নিয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমও প্রসারিত হচ্ছে।
সম্প্রতি বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে চাং চুয়ান নামে একজন মেডিক্যাল সঙ্গী ৮৬ বছর বয়সী এক রোগীর দেখভাল করেন। হেবেই প্রদেশ থেকে আসা ওই বৃদ্ধ তার মেয়ে সঙ্গে নিয়ে চোখের ছানির চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তবে মেয়ে নিজেও বয়স্ক হওয়ায় বিভিন্ন কাজে সহায়তার জন্য চাং-এর সেবা প্রয়োজন হয়। চাং রোগীর টেস্ট রিপোর্ট সংগ্রহ, ওষুধ কেনা এবং চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম সম্পাদনসহ রোগীকে এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোরে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন।
চাং জানান, তার ক্লায়েন্টদের ৮০ শতাংশই বয়স্ক এবং বেশিরভাগই রাজধানী বেইজিংয়ের বাইরে থেকে আসেন। এদের সঙ্গে থাকা স্বজনরাও সাধারণত বয়স্ক হন, ফলে হাসপাতালের জটিল প্রক্রিয়া মেনে চলা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে। এ ছাড়া অনেক বয়স্ক রোগী আধুনিক কিয়স্ক যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন না বা চিকিৎসকের কারিগরি পরামর্শ বুঝতে অসুবিধায় পড়েন। চাং এসব ক্ষেত্রে সহজ ভাষায় পরামর্শ ব্যাখ্যা করেন এবং প্রয়োজনীয় নোট রাখেন।
চীনের জনসংখ্যার বার্ধক্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের সেবার চাহিদা বাড়ছে। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে সিয়াওহংশু ও তৌইনে এই সেবার প্রচারণা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে এ পেশার জন্য এখনো সার্বজনীন কোনো মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ ও মানদণ্ড তৈরিতে উদ্যোগ নিচ্ছে। গত জুলাইয়ে সাংহাইয়ের একটি বয়স্ক সেবা সংস্থা মেডিক্যাল সঙ্গীদের জন্য কিছু নির্দেশিকা ও যোগ্যতার তালিকা প্রকাশ করেছে। চাং-এর মতে, মেডিক্যাল সঙ্গীরা অনেক ক্ষেত্রে রোগীর পরিবারের সদস্যের মতো ভূমিকা পালন করেন।
শাংহাই ওপেন ইউনিভার্সিটি গত বছর থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছে। আগামী বছর তারা আরও একটি কোর্স শুরু করার পরিকল্পনা করছে। এ ধরনের উদ্যোগ চীনের ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সেবায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।
সূত্র: চায়না মিডিয়া গ্রুপ