শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শিরোনাম:
Homeঅর্থনীতিআদালতে নির্দেশ অমান্য করে অন্যের জমি দখল ও দুর্নীতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ হন...

আদালতে নির্দেশ অমান্য করে অন্যের জমি দখল ও দুর্নীতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ হন আবুল বাশার

- Advertisement -spot_img
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল বাশারের বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখল ও অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ হিসাবে  নিয়োগের অভিযোগ।
নড়াইলের লোহাগাড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভূমিদস্যু মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল বাশার (ওরফে বকুল শেখ)২০২০ সালে থেকে আজ অবদি মৃত্য: ভাষা সৈনিক ডাক্তার শামসুর রহমান ও তার অংশীদারীদের জমি জোর দখল করে মাছের চাষ করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য কাজী আতাউর রহমান অভিযোগ করে জানান,  আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দুই একর জমির পুকুরে আমাদের  মাছ চাষ করে আসছে আবুল বাশার। পেশাগত কারণে আমাদের জমির অংশীদাররা সবাই নড়াইলের বাইরে অর্থাৎ খুলনাও ঢাকায় থাকে। অবৈধ দখলের ঘটনায় নড়াইল আদালতে ২০২১ সালে ২০ সেপ্টেম্বর আবুল বাশারের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করি আমি  কাজী আতাউর রহমান । এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে ওই পুকুর থেকে কেউ মাছ ধরতে বা অন্য কোন কাজ করতে না পারে এই মর্মে একটি স্থগিত আদেশ দেয় কোট । এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের হত্যার হুমকি দেয় তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি  প্রতিকার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লোহাগাড়া থানায় ১৪ই জুলাই ২০২২ সাধারণ ডায়েরি- জিডি নাম্বার ৬১২ করেছেন। গত ১০ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ লোহাগাড়া কোটে আমার  ওই দুটি মামলার  শুনানির  দিন ধার্য ছিল । ওই দিন আবুল বাশার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কোট প্রাঙ্গনে আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয় এবং বলে কোটের বাইরে গেলে তোর লাশ বানিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিব। মূলত আবুল বাসার আমাদের ০৭ শরীকের ০৩ শরিকের জমি ভয়- ভীতি দেখিয়ে নিজ নামে ক্রয় করে। এবং চার শরিকের  জমি দখল করে মাছ চাষ করে আসছে। আবুল বাশার দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর মাগুরা বারাসিয়া দাখুলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিল এবং ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের  বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান এই মাদ্রাসায় আয়োজন করতেন এবং নিজেকে ওলামা লীগের একজন বড় নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। ৫ ই আগস্ট ২০২৪ সালে যখন এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটে তখন  আবুল বাশার তার নিজ গ্রাম নড়াইল লোহাগাড়া  গ্রামে, তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা নিয়োগ নেয়। নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ এই নিয়োগেও অনেক অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে মাদ্রাসা নিয়োগ নিয়েছে আবুল বাশার। আবুল বাশারের নিজ গ্রাম  কুমাড়ি তার একটি লাঠিয়াল ও সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে এবং এলাকা অনেকের জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে  তার বিরুদ্ধে । এলাকার অনেক মানুষই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় কিন্তু তার সন্ত্রাসী বাহিনী ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনা । অনেকেই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের মামলায় আসামি  হয়েছে বলে  এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
কাজী আতাউর রহমান আরো বলেন,আবুল বাসারের সন্ত্রাসীরা কুমড়ি আমাদের  গ্রামের বাড়িতে কেয়ার টেকারকে  জীবননাশের হুমকি দিয়ে বাড়িছাড়া করেছে । এখন পৈত্রিক বাড়িতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ।
 একজন মাদ্রাসার শিক্ষকের এই অনিয়ম ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এলাকার সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছে না। তাই এই মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথা কর্তৃপক্ষ সহায়তা প্রয়োজন ।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহে
তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায়  অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে
অধ্যক্ষ হিসাবে  নিয়োগে
পান। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও কাঁটাছেড়া, আগের মাদরাসা থেকে ছাড়পত্র না নিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান এবং টাকার বিনিময়ে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ এস এম আবুল বাশারের বিরুদ্ধে ! এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত সাক্ষেপে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীসহ ওই মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক ও সচেতনমহল। বিষয়টি তদন্তের জন্য গত ৮ অক্টোবর মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন তারা। তবে এখনো পর্যন্ত অধ্যক্ষ নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। গত ২ আগস্ট কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগ হয়েছে। এর আগে এস এম আবুল বাশার মাগুরা সদরের বারাশিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার ছিলেন।
অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন কর্মস্থল কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় যোগদান করলেও আগের কর্মস্থল বারাশিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র নিয়ে আসেননি তিনি। বিষয়টি বারাশিয়া দাখিল মাদরাসার তৎকালীন সভাপতি ও মাগুরা সদরের বগিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওনক হোসেনও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এস এম  আবুল বাশার আমাদের মাদরাসার সুপার থাকাকালীন অন্য মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এখান থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র নেয়া এবং মাদরাসার আর্থিক হিসাব বুঝিয়ে দেননি তিনি। শুনেছি ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদে বেতনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কাগজপত্র পাঠিয়েছেন।
এদিকে, কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কে এম হাসমত উল্লাহ বলেন, গত ২ আগস্ট অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ঢাকার সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এস এম আবুল বাশার তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আগেই প্রশ্ন পেয়ে যান। নিয়োগ পরীক্ষার দিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে প্রতিকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হয়। অথচ দেশে বিভিন্ন পরীক্ষাসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমাদের এই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াসহ দেশে প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ থাকায় মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শওকত হুসাইন ডিজির প্রতিনিধিকে ওইদিন (২ আগস্ট) পরীক্ষা না নেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু কোনো অনুরোধ না শুনে ডিজির প্রতিনিধি প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।
অপর পরীক্ষার্থী মো: ওলিউল্লাহ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার দিন এস এম আবুল বাশার আমাদের নানা ধরণের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়েছেন। পরীক্ষার নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। মো: মঈনুদ্দীন বলেন, এস এম আবুল বাশার মাগুরা জেলা সদরের বারাশিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে সঠিক ভাবে ছাড়পত্র নিয়ে আসেননি। অধ্যক্ষ পদে বেতনের জন্য ভুয়া কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন। তদন্ত করে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যাপারে ডিজির প্রতিনিধি ঢাকার সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর থেকে তার বক্তব্যের জন্য বারবার মোবাইল ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের মাধ্যমেও তার বক্তব্য পাওয়ার অনুরোধ করা হলেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
অন্যের জমি দখল ও নিয়োগের  ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এস এম আবুল বাশার বলেন,আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে ।
 কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষা যথাযথ নিয়মে হয়েছে। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে বলেন, এটা ঠিক নয়। আমি যোগ্যতা অর্জন করে নিয়োগ পেয়েছি।
- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here