শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
Homeবিনোদনরাজনীতির আঁতুড়ঘর ঢাবির ১৮ হল: ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি

রাজনীতির আঁতুড়ঘর ঢাবির ১৮ হল: ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি

- Advertisement -spot_img

মধুর ক্যান্টিন ছাত্ররাজনীতির প্রাণকেন্দ্র, আর ১৮টি হলকে জাতীয় রাজনীতি কিংবা ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি পায়রা চত্বরে ‘একাত্তরের মেধা নিধন: ইতিহাসের ক্ষত ও বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্গঠন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ঢাবি শাখা ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনকে ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর বলা হয়। কিন্তু আমি মনে করি, মধুর ক্যান্টিন ছাত্ররাজনীতির প্রাণকেন্দ্র, আর জাতীয় রাজনীতি কিংবা ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হল এবং মেয়েদের পাঁচটি হল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সুশৃঙ্খলভাবে হলগুলোতে বজায় থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম যুগ যুগ ধরে ইতিহাসে লেখা থাকবে।

এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি চাই না বলে বয়ান তুলছে অনেকে। ছাত্ররাজনীতি চাই না বলে যারা বিভিন্ন ব্যানার তুলেছিল পরবর্তী দেখা গেল তারা বিশেষ গোষ্ঠীর। আমি হলপাড়ার ভাইদের এবং বোনদের অনুরোধ করে বলতে চাই, প্রিয় ভাই ও প্রিয় বোনেরা আপনারা অবশ্যই আপনাদের যৌক্তিক মতামত প্রচার করবেন, কিন্তু যে কোনও ব্যানারে মিছিলে যাওয়ার আগে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী হিসেবে সচেতনতার সাথে খেয়াল করে দেখবেন ব্যানারটি কার প্রতিনিধিত্ব করছে। তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে কিনা। আমি বিশ্বাস করি ছাত্রদল বামের ডানে, ডানের বামে। আমরা মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী।

ছাত্রদল এমন কার্যকলাপ করে না যা সাধারণ শিক্ষার্থীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ছাত্রদলের ইতিহাস-ঐতিহ্য দেখবেন, কোন প্যাটার্ন ধারণ করে ছাত্ররাজনীতি পরিচালনা করে। আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রদল স্মার্ট ছাত্রদের সংগঠন। ছাত্রদল দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন, এটি একদিনে হয়ে উঠেনি। তিলে তিলে আজকের এই পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।

জুলাই আন্দোলন একক কারও কৃতিত্ব নয় বলে উল্লেখ করে সাহস বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অনেকের মিডিয়াতে ফেসভ্যালু বেড়ে গেছে দেখে মনে করে অনেককিছু করে ফেলেছে। ছাত্রদলের ১৫৩ জন শহীদ হয়েছে। মেট্রোরেল মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিল আমাকে। আমাদের চার চারজন নেতাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে হামলা-মামলা, গুম-খুন, ছাত্রলীগ যে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সৃষ্টি করেছে তার বহিঃপ্রকাশ হয়েছে ৫ আগস্ট। আপনারা-আমরা সবাই মিলে আন্দোলন করেছি। আপনারা নেতৃত্ব যেমন দিয়েছেন, আমরা সেই নেতৃত্ব বেগবান করেছি। তাই এটি একক কোনও কৃতিত্ব নয়।

তিনি বলেন, আমরা অনুরোধ করছি, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগ যেভাবে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে হলগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব করেছিল, গেস্টরুম কালচার করে মিছিল-মিটিংয়ে জোর করে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ট্রমার সৃষ্টি করেছিল তাদের ন্যায় আচরণ করবো না। বিএনপি সরকার গঠন করলে অবশ্যই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিটি ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাউসার বলেন, সবচেয়ে বেশি বিকৃতির শিকার হয়েছে ইতিহাস। রাষ্ট্রে গণতন্ত্র না থাকলে এটি সমাজ-সংস্কৃতি-ইতিহাসে ছড়িয়ে পড়ে। গত ১৫ বছর ইতিহাস বিকৃতির নানা ঘটনা ঘটেছে। ইতিহাসের বয়ানকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসকে আদালতের বিষয়বস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতিহাসের গণতন্ত্রায়ণ প্রয়োজন। ইতিহাস নিয়ে গবেষণা হবে, গবেষক একেকজন একেক ফাইন্ডিং নিয়ে আসবেন। গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় সেটি ইতিহাস হিসেবে টিকে থাকবে। একটি স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান ঠিক করে দেওয়া আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এটা মানুষ বেছে নেবে। জাতির জনক কে হবে– মানুষ ঠিক করবে। সবকিছু ঠিক করার অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্রায়ণের মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস রচনা করতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাবির পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ছাত্রদল নেতা আমানউল্লাহ আমান, নাসির উদ্দিন শাওন, আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক প্রমুখ।

আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ছবি, বুদ্ধিজীবী হত্যার সংবাদের কাটিংসহ বিভিন্ন স্মৃতি সংবলিত চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ সংবাদ
- Advertisement -spot_img
এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here