আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী):
রাজশাহীর বাঘায় আমের চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। গাছ থেকে গুটি আম নামানো শুরু হয়েছে ১৫ মে থেকে। এরমধ্যে গোলাপ ভোগ আম ২৫ মে, খিরসাপাত ২০ মে এবং ল্যাংড়া ১০ জুন থেকে শুরু হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) আড়ানী স্টেশন থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম।
৫ বছর যাবত প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উদ্যোগ আম পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ভরা মৌসুমে ট্রেনের মাধ্যমে আম পরিবহনে সরকারি উদ্যোগ চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’।
আড়ানী স্টেশনের তথ্যমতে ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ এই ট্রেনে আম ছাড়াও কৃষিজাত পণ্য ও অন্যান্য মালামালও পরিবহন করা হয়। প্রথম দিনে আড়ানী স্টেশন থেকে ঢাকায় আম গেছে ৩৯ ক্যারেট অর্থাৎ ৮২০ কেজি।
‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেনটিতে আড়ানী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকায় পৌঁছেেত খরচ পড়ছে ১ টাকা ৪৩
পয়সা। অল্প মূল্যে আম পরিবহনের বিষয়টি সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নিরাপদে আম পরিবহনের জন্য ট্রেনটি ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে আড়ানী খয়েরমিল নুরনগর গ্রামের আম ব্যবসায়ী আবু হানিফ বলেন, আমার ৩৮০ কেজি আম ১ টাকা ৪৩ পয়সা হিসেবে বুক করেছি। ২৫ কেজি ওজনের ১২টি ক্যারেট বুক করা হয়েছে। এছাড়া ক্যারেট প্রতি ১০ টাকা লেবার খরচ দিয়েছি। ঢাকা স্টেশনে নামাতে লাগবে আরো ১০ টাকা। তবে সড়কের চেয়ে টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
আড়ানী স্টেশেনের কুলির সরদার হোসেন আলী বলেন, এই স্টেশনে ১১ জন কুলি রয়েছি। এই ট্রেনটি চালু হওয়ায় কুলিদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
আড়ানী স্টেশন মাস্টার আলমগীর হোসেন বলেন, সড়কের চেয়ে পরিবহন খরচ অনেক কম হচ্ছে। এতে আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। আম পরিবহনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছি। আড়ানী থেকে ট্রেনটি ছাড়ছে ৮টা ১৫ মিনিটে। ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টা ১৫ মিনিটে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেনটি মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট)
আসনের এমপি’র আন্তরিক প্রচেষ্টায় চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা সরাসরি সুফল পাবেন। তবে আম পরিবহনের জন্য অল্প সময়ে মধ্যে চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেন।
এছাড়া ঢাকার মতিঝিলের আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে বিদেশে আম রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে ২ কোটি টাকার আম বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৮০০ কোটি টাকার আম বেচা-কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ১২ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।