রাজশাহীর বাঘায় অসুস্থ্যের টাকার চেক নিতে এসে রাজিয়া বেগম (৬১) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। রাজিয়া বেগম উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের ধন্দহ গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী।
জানা যায়, রাজিয়া বেগম দীর্ঘদিন থেকে প্যারালাইসড, ক্যান্সার ও হার্ডস্টোকে ভূগছিলেন। সে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে সমাজ সেবা অফিসের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তার নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক প্রেরন করেন। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় উপজেলা পরিষদের হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে চেক বিতরনের আয়োজন করা হয়।
সেই অনুষ্ঠানে রাজিয়া বেগম চেক নিতে এসে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাকে তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎক মৃত্যু ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এ বিষয়ে রাজিয়া বেগমের ছোট ছেলে দিলদার আলী দুলু বলেন, আমরা অত্যান্ত দরিদ্র পরিবারের মানুষ। আবার বড় ভাই জিন্নাত আলী প্রতিবন্ধী। আমার মা আড়াই বছর ধরে প্যারালাইসড রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর মাঝে ক্যানসারও ধরা পড়ে। চিকিৎসা সহায়তার টাকার জন্য উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের মাধ্যমে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। সেই সহায়তার টাকার চেক নেওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আসেন। এ সময় চেক হাতে পাওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক রাকিব আহমেদ মৃত ঘোষনা করেন। মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
ধন্দহ গ্রামের আলম হোসেন বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় রাজিয়ার জানাযার নামাজ শেষে এলাকার গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, অসুস্থ ১০ জন রোগীকে ৫০ হাজার করে টাকার চেক দেওয়ার তালিকায় রাজিয়া বেগম ছিলেন। রাজিয়া বেগম আগে থেকে অনুস্থ্য ছিলেন। তিনি চেক নিতে এসে হটাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। পরে আমাদের পক্ষ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র নেওয়ার পর মৃত্যু হয়। তবে তাকে ওই ৫০ হাজার টাকাসহ তার দাফনের সমস্ত ব্যায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে করা হয়েছে।