শবে কদর হল রমজানের শেষ দশকের একটি সম্মানিত রাত। এ রাতে আল্লাহ হেরা পর্বত থেকে সম্পূর্ণ কোরআন নাজিল করেছেন। তাই শবে কদরের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। আল্লাহ এ রাতে দুনিয়ার আসমানে আগমন করেন।
আর বান্দাদের প্রার্থনাগুলো কবুল করেন। তবে এ রাতটি আল্লাহ গোপন রেখেছেন। তাই হাদিসে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে খুঁজতে বলা হয়েছে। হযরত আয়েশা রা. বলেন মহানবি সা. বলেছেন, ‘তোমরা শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (বুখারি: ২০১৭) বিভিন্ন হাদিসে এ রাতের কিছু আলামত বা লক্ষণ বর্ণনা করা হয়েছে।
নাতিশীতোষ্ণ রজনী
শবে কদরের রজনী হবে নাতিশীতোষ্ণ। অর্থাৎ একদম বেশী ঠান্ডাও না আবার গরমও না। আবহাওয়ায় থাকবে প্রশান্তি। হাদিস শরীফে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, নবী সা. বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরের রাতটি হবে প্রফুল্লময়। না গরম, না ঠাণ্ডা। সেদিন সূর্য উঠবে লালবর্ণে, তবে দুর্বল থাকবে।’ (ইবনু খুজাইমাহ: ২১৯২)
উজ্জ্বল রজনী
শবে কদরের আরেকটি আলামত বা লক্ষণ হল, শবে কদরের চাঁদ হবে উজ্জ্বল। জোৎস্নায় আলোকিত থাকবে চারদিক। হাদিসে এমনই বর্ণিত হয়েছে হযরত নবি (সা.) বলেন, ‘লাইলাতুল কদরের আলামত হচ্ছে, স্বচ্ছ রাত, যে রাতে চাঁদ উজ্জ্বল হবে, আবহাওয়ায় প্রশান্তি (সাকিনাহ) থাকবে। না ঠাণ্ডা, না গরম। সকাল পর্যন্ত (আকাশে) কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না। সে রাতের চাঁদের মতোই সূর্য উঠবে (তীব্র) আলোকরশ্মি ছাড়া। শয়তান সেই সময় বের হয় না।’ (মুসনাদ আহমদ: ২২৭৬৫)
সূর্যের তাপ কম থাকা
শবে কদরের নির্ধারিত আলামত সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি হল সূর্যের তাপ কম থাকা। অর্থাৎ অন্যান্য দিনের ন্যায় সূর্য উদিত হবে ঠিকই তবে তার তাপ তুলনা মূলক কম হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত নবী সা. বলেছেন, ‘ওই রাতের আলামত বা লক্ষণ হলো, রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে। তবে উদয়ের সময় তার কোনো তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (মুসলিম: ১৬৭০)
বিশেষ কিছু রাত
শবে কদরের কোন রাত নির্ধারিত নেই। তবে বিশেষ কিছু রাতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হযরত নবী সা. বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদর রয়েছে সপ্তম, নবম অথবা বিংশ, যে রাতে (পৃথিবীর) নুড়ি পাথরের চেয়ে বেশি সংখ্যক ফেরেশতা জমিনে নেমে আসে।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৩/১৭৮)