গত শাসনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত অপশাসন নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই উদ্যোগ প্রশংসাযোগ্য। সংবিধান, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনপ্রয়োগ, দুর্নীতি, নির্বাচনী প্রক্রিয়া—এই ছয় ক্ষেত্রে সংস্কার-পরিকল্পনার খসড়া তৈরির জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি কমিটি দেশের মূল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত চিহ্নিত করার জন্য। আরেকটি কমিটি হয়েছে নির্দিষ্ট সমস্যাগুলো অবিলম্বে মোকাবিলা করা এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের সুপারিশ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য, নারী, গণমাধ্যম ও শ্রম-সম্পর্কিত আরও চারটি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এটি একটি বিশাল কাজ, বিশেষ করে এর বাস্তবায়ন। আমরা অতীতে এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারি নীতির বাস্তবায়ন ব্যর্থতার পাশাপাশি প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রমবর্ধমান অবক্ষয় প্রত্যক্ষ করেছি। অনুমান করা যায়, এই অপশাসনের প্রক্রিয়া ঘুরিয়ে দিতে কমিশন ও কমিটিগুলোর নিজ নিজ ক্ষেত্রে কী করা দরকার, সে সম্পর্কে একগুচ্ছ উপযুক্ত ধারণা হাজির করবে।
তবে এ বিষয়ে জনসাধারণের কাছে একটি বিষয় তেমন স্পষ্ট নয়। তা হলো, কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংস্কারগুলো কার্যকর করা হবে এবং কারা এসব সংস্কার কার্যকর করবেন?
আমাদের মনে রাখা দরকার, যেসব ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন, সেসব সমস্যা যে কেবল বিগত শাসনামলেই উদ্ভূত হয়েছে, এমন নয়। অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যাগুলো কয়েক দশকের বেশি সময় আগের। প্রতিটি শাসনামলে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং তা সমাধানে ব্যর্থতা সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের শাসন এসব সমস্যাকে ক্যানসারের মতো গভীরতর করেছে। আমাদের রাজনীতিকে অপূরণীয় ক্ষতি থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন গুরুতর অস্ত্রোপচারেরমতো হস্তক্ষেপ।