ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীরা একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং ভবনের দেওয়ালে বিদ্বেষমূলক ও বর্ণবাদী স্লোগান লিখেছে। মসজিদের প্রবেশপথে হিব্রু ভাষায় ‘প্রতিশোধ’ ও ‘আরবরা নিপাত যাক’ লেখা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাদ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার সালফিতের গভর্নর আবদুল্লাহ কামিল জানান, মারদা গ্রামের বার আল-ওয়ালিদাইন মসজিদে বসতকারীদের এই হামলা ঘটে। তিনি বলেন, আজ ভোরে একদল বসতকারী মসজিদে আগুন লাগানোর এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়।
গ্রামের এক বাসিন্দা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বসতকারীরা মসজিদের প্রবেশপথে আগুন লাগায় এবং দেওয়ালে হিব্রু ভাষায় স্লোগান লিখেছে। আরেক বাসিন্দা জানান, আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
মারদা গ্রামের কাউন্সিল প্রধান নাসফাত আল-খুফাশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হামলাকে ‘সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে বর্ণনা করেছেন।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইনের মতে, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে গড়ে তোলা ইসরায়েলি বসতি অবৈধ। গভর্নর কামিল জানান, এর আগেও বসতকারীরা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সুরক্ষায় গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করেছে এবং আশপাশের এলাকায় ভাঙচুর ও বিদ্বেষমূলক গ্রাফিতি লেখার ঘটনা ঘটেছে।
রামাল্লায় ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে ‘স্পষ্ট বর্ণবাদী কর্মকাণ্ড’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে উগ্র ডানপন্থি শাসক সরকারের প্রচারিত বিদ্বেষের প্রতিফলন।’
ইসরায়েলি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেট এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর হিসেবে দেখছি এবং অপরাধীদের কঠোর বিচারের আওতায় আনতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেব।’
গাজা যুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে বসতকারীদের হামলা বাড়তে থাকে। ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিম তীরে অন্তত ১ হাজার ৪০০টি বসতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী বা বসতকারীদের হাতে অন্তত ৮০৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।